আজকাল দেখা যাচ্ছে কমিক্স পড়ার প্রবণতা এখনকার বাচ্চা বা কিশোরদের খুব কম। বাংলায় কমিক্স ১৯৬০ সালের আগে বেরোলেও মূলত বাংলায় কমিক্স জনপ্রিয়তা প্রায় ইন্দ্রজাল কমিক্স থেকে। তারপর ১৯৮০ সাল.. এটাই ছিল বাংলা কমিক্সের স্বর্ণযুগ। নারায়ণ দেবনাথের বাটুল,হাঁদা-ভোঁদা,নন্টে-ফন্টের পাশাপাশি ময়ূখ চৌধুরীর খাপে ঢাকা তরবার, বিশ্ব-সাহিত্য কমিক্স, অমর চিত্র কথা, ডায়মন্ড কমিক্সের চাচা চৌধুরী,বিল্লু প্রভৃতি মজার চরিত্রের সঙ্গে অগ্নিপুত্র-অভয়, ডায়নামাইট প্রভৃতি অ্যাকশনধর্মী কমিক্স। এছাড়া টিনটিন,টারজান,অরণ্যদেব, ম্যানড্রেক, রিপ কার্বি তো ছিলই। অর্থাৎ দেশী বিদেশী কমিক্সে ভর্তি।
এই প্রসঙ্গে আমার নিজের ছোটবেলার সম্বন্ধে বলি। আমি ডায়মন্ড কমিক্স পরে বড় হয়েছি। তখন চাচা চৌধুরীর রাকা সিরিজ বেশ জনপ্রিয়তা .পেয়েছিলো। স্কুলে অফ-পিরিয়ড হলে আমরা অনেক সময় শুধু কমিক্স পড়ে কাটিয়ে দিতাম। কোনো এক বন্ধু তার বাড়ি থেকে কমিক্স নিয়ে আসতো, আর আমরা সবাই পালা করে পড়তাম। একদিন এক বন্ধু ইন্দ্রজাল কমিক্স নিয়ে এসেছিলো, তার দেখাদেখি আমরা সবাই ইন্দ্রজাল পড়তে আরম্ভ করি, বিশেষত ফ্যান্টম। আমার ডাক নাম "রাকা" বলে বন্ধুরা খুব ক্ষ্যাপাত। আবার রোগা বলে আমার দিদি আমাকে বলতো "কেল্টুদা". আমার বাড়ির সবাই বাটুল, নন্টে-ফন্টে পরে হেসে কুপোকাত। বাড়িতে ছোটবেলায় আনন্দমেলা রাখা হত আর তার সব কমিক্সই আমি পড়তাম। পরবর্তীকালে নানা রকম দেশি-বিদেশী কমিক্সের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি এবং এখনও হচ্ছি।
১৯৯০-১৯৯৫ সাল অবধিও বাংলায় কমিক্সের মোটামুটি ভালোই জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু ৯০ সালের শেষদিক থেকে কমিক্সের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। ইন্দ্রজাল বন্ধ হয়ে গেছে। ডায়মন্ড কমিক্সের গল্পগুলি একঘেয়ে হয়ে গেছে। বলতে গেলে নারায়ন দেবনাথের হাঁদা-ভোঁদা/বাটুল আর টিনটিন ছাড়া কিছুই রইলো না সেই সময়ের। ৯৫/৯৬ নাগাদ অভিজিৎ চ্যাটার্জীর করা শঙ্কু/ফেলুদা কমিক্স ভালোই লাগতো। কিন্তু তাও প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়।
এখনকার(২০০০ এর পরবর্তী) কোনো বাচ্চা বা কিশোর কমিক্স সম্বন্ধে খুব একটা আগ্রহী নয় বললেই চলে। অনেকেই নাম শোনেনি ফ্যান্টম বা ম্যানড্রেক এর, বাঙালি চরিত্র দূরের কথা। কেউ বা শুধু বাটুল/হাঁদা-ভোঁদার সঙ্গে পরিচিত,কেউ তাও নয়। এর কারণ কি? আমি মনে করি প্রধানত তিনটি:
১. কিছু কমিক্স শুধু সেই যুগের উপযোগী, যে যুগে কমিক্সটি বানানো হয়েছিল। যেমন ফ্যান্টম এর কিছু ফ্যান্টাসী বা রূপকথার মতন কমিক্স, যা সে যুগের বাচ্চারাই পড়ত। অমর চিত্র কথাও তাই।
২. আমাদের ছোটবেলায় স্মার্টফোন বা মোবাইল ছিল না। এখনকার বাচ্চারা গেম খেলায় বেশি আসক্ত।
৩. আধুনিক যুগপযোগী কমিক্স বা চিত্র-নাট্যের অভাব।
আমি কোনো কমিক্স বিশারদ নই। অনেকেই হয়তো আমার সঙ্গে সহমত হবেন না, তবে এগুলি আমার একান্ত ধারণা। সম্প্রতি লালমাটি,দেব সাহিত্য কুটির, দীপ প্রকাশন, বিশেষত বুক-ফার্ম, মিনিকমিক্স, জিরো কমিক্স বর্তমানে বাংলায় কমিক্সের আর এক স্বর্নযুগ আনার চেষ্টা করছে। বাংলায় এখনও কমিক্স-প্রেমী মানুষ আছেন অনেকেই, যারা আমাদের পাশে না থাকলে ব্লগ বা কমিক্সের বই কোনোটাই চলতো না, কিন্তু এসংখ্যা সীমাবদ্ধ।
দর্শকবন্ধুদের একটি প্রশ্ন করতে চাই.. আপনাদের কি মনে হয়.. কি করতে পারলে আবার বাংলায় কমিক্সের স্বর্নযুগ ফিরে আসবে? কি করলে বাচ্চারা আবার বাংলা কমিক্স পড়বে?
আপাতত আমার একান্ত একটি পরামর্শ: আপনি যে কমিক্স পড়ছেন, সেটি আপনার ছেলেমেয়েকেও পড়ান এবং তাকে বলুন তার স্কুল এর বন্ধুদের সেটি দেখাতে। এভাবে কমিক্সের অন্তত কিছু বেশি পাঠক হবে এই আশা রাখি।
আজকে আমার বন্ধুদের জন্য রইলো দুই অনূদিত কমিক্স, একটি বেরোতো শুকতারাতে ধারাবাহিক ভাবে।
এই প্রসঙ্গে আমার নিজের ছোটবেলার সম্বন্ধে বলি। আমি ডায়মন্ড কমিক্স পরে বড় হয়েছি। তখন চাচা চৌধুরীর রাকা সিরিজ বেশ জনপ্রিয়তা .পেয়েছিলো। স্কুলে অফ-পিরিয়ড হলে আমরা অনেক সময় শুধু কমিক্স পড়ে কাটিয়ে দিতাম। কোনো এক বন্ধু তার বাড়ি থেকে কমিক্স নিয়ে আসতো, আর আমরা সবাই পালা করে পড়তাম। একদিন এক বন্ধু ইন্দ্রজাল কমিক্স নিয়ে এসেছিলো, তার দেখাদেখি আমরা সবাই ইন্দ্রজাল পড়তে আরম্ভ করি, বিশেষত ফ্যান্টম। আমার ডাক নাম "রাকা" বলে বন্ধুরা খুব ক্ষ্যাপাত। আবার রোগা বলে আমার দিদি আমাকে বলতো "কেল্টুদা". আমার বাড়ির সবাই বাটুল, নন্টে-ফন্টে পরে হেসে কুপোকাত। বাড়িতে ছোটবেলায় আনন্দমেলা রাখা হত আর তার সব কমিক্সই আমি পড়তাম। পরবর্তীকালে নানা রকম দেশি-বিদেশী কমিক্সের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি এবং এখনও হচ্ছি।
১৯৯০-১৯৯৫ সাল অবধিও বাংলায় কমিক্সের মোটামুটি ভালোই জনপ্রিয়তা ছিল। কিন্তু ৯০ সালের শেষদিক থেকে কমিক্সের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। ইন্দ্রজাল বন্ধ হয়ে গেছে। ডায়মন্ড কমিক্সের গল্পগুলি একঘেয়ে হয়ে গেছে। বলতে গেলে নারায়ন দেবনাথের হাঁদা-ভোঁদা/বাটুল আর টিনটিন ছাড়া কিছুই রইলো না সেই সময়ের। ৯৫/৯৬ নাগাদ অভিজিৎ চ্যাটার্জীর করা শঙ্কু/ফেলুদা কমিক্স ভালোই লাগতো। কিন্তু তাও প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়।
এখনকার(২০০০ এর পরবর্তী) কোনো বাচ্চা বা কিশোর কমিক্স সম্বন্ধে খুব একটা আগ্রহী নয় বললেই চলে। অনেকেই নাম শোনেনি ফ্যান্টম বা ম্যানড্রেক এর, বাঙালি চরিত্র দূরের কথা। কেউ বা শুধু বাটুল/হাঁদা-ভোঁদার সঙ্গে পরিচিত,কেউ তাও নয়। এর কারণ কি? আমি মনে করি প্রধানত তিনটি:
১. কিছু কমিক্স শুধু সেই যুগের উপযোগী, যে যুগে কমিক্সটি বানানো হয়েছিল। যেমন ফ্যান্টম এর কিছু ফ্যান্টাসী বা রূপকথার মতন কমিক্স, যা সে যুগের বাচ্চারাই পড়ত। অমর চিত্র কথাও তাই।
২. আমাদের ছোটবেলায় স্মার্টফোন বা মোবাইল ছিল না। এখনকার বাচ্চারা গেম খেলায় বেশি আসক্ত।
৩. আধুনিক যুগপযোগী কমিক্স বা চিত্র-নাট্যের অভাব।
আমি কোনো কমিক্স বিশারদ নই। অনেকেই হয়তো আমার সঙ্গে সহমত হবেন না, তবে এগুলি আমার একান্ত ধারণা। সম্প্রতি লালমাটি,দেব সাহিত্য কুটির, দীপ প্রকাশন, বিশেষত বুক-ফার্ম, মিনিকমিক্স, জিরো কমিক্স বর্তমানে বাংলায় কমিক্সের আর এক স্বর্নযুগ আনার চেষ্টা করছে। বাংলায় এখনও কমিক্স-প্রেমী মানুষ আছেন অনেকেই, যারা আমাদের পাশে না থাকলে ব্লগ বা কমিক্সের বই কোনোটাই চলতো না, কিন্তু এসংখ্যা সীমাবদ্ধ।
দর্শকবন্ধুদের একটি প্রশ্ন করতে চাই.. আপনাদের কি মনে হয়.. কি করতে পারলে আবার বাংলায় কমিক্সের স্বর্নযুগ ফিরে আসবে? কি করলে বাচ্চারা আবার বাংলা কমিক্স পড়বে?
আপাতত আমার একান্ত একটি পরামর্শ: আপনি যে কমিক্স পড়ছেন, সেটি আপনার ছেলেমেয়েকেও পড়ান এবং তাকে বলুন তার স্কুল এর বন্ধুদের সেটি দেখাতে। এভাবে কমিক্সের অন্তত কিছু বেশি পাঠক হবে এই আশা রাখি।
আজকে আমার বন্ধুদের জন্য রইলো দুই অনূদিত কমিক্স, একটি বেরোতো শুকতারাতে ধারাবাহিক ভাবে।
পড়ুন স্টার ট্রেক (কার্তিক ১৩৯২- ভাদ্র ১৩৯৪)
আর অন্যটি বেরোতো আনন্দবাজার পত্রিকায়।
আজকের চমক, ১৯৭৫ সালের একটি রিপ কার্বি। সংগ্রাহক দেবাশীষ চক্রবর্তীকে যে কি বলে ধন্যবাদ জানাবো,তার ভাষা নেই। উনি ছোটবেলায় স্ট্রিপ কেটে রেখেছিলেন, তাই আজ এই অমূল্য জিনিস সবার সঙ্গে ভাগ করতে পারছি..
পড়ুন ধূর্ত ম্যাংলার(স্ট্রিপ নং ১০২ manglers big heist)
এবার রোভার্সের রয় দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত। পরের পোস্টে আরও একটি চমক থাকবে।
8 comments:
Darun. Sagoto Da. Ami mone kori. Onekei Comics ke Sishu sahityo hisebe dekhen, ekhono, Onek Manush Jannen nah je koto nanan swader comics ache bajare.Biseshoto English e. Emnio TV, Serial ar Smart Phone er Jonno Ajkal Boi porar probonotao tolanite ese thekeche, Comics toh aro porer Byapar. Tomar sathe sohomot. Maa Babara Jodi Bacchader Comics pore Sonan ar toder moddhe agroho sristi korem,ebong sei bacchara jodi school ba obosor somoye bondhuder sathe segulo pora niye abar mete uthte suru kore tobei Abar Comics er Swornojug kichumatray Fire asa Sombhob.
Anyway Eto Dusprapyo Duto Series Share Korar Jonno Osonkhyo Dhonnobad :)
খুব সুন্দর ভাই।
শুধু দুঃখ একটাই বছরে দুটো মাত্র পোস্ট
মন আর খিদে কোনোটাই মিটছে না।
দুটি দুষ্প্রাপ্য কমিকসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
চমৎকার পোস্ট স্বাগত ।
২০১৮ সালে 'THE RETURN OF INDRAJAL COMICS!!!' আমাদের আরও সমৃদ্ধ করুক ।
নতুন বছরে তোমার জন্য রইল অফুরন্ত শুভেচ্ছা ।।
v-I-s-h-o-n valo . SEI CHOTO BELAR DIN FIRE PELAM. TUMI JE ETO KOSTO KORE KORCHO, ER JONNO ONEK DHANYABAD. 2018 TE ARO ASHA KORCHI.
@ all: sobai k dhonyobad apnader comments er jonyo..
@ ranjan da: Dada,ro kichu onyo kaj er modhye achi.. Book-farm er onektai involved,
Apni janen.. Abar time pelei post korbo
Thanxs a lot Sagoto bhai. Wishing you a very happy new year ahead.
Happy New Year. Excellent effort. Byomkesh Bakshir comics share korle aro anondito hobo. Dhonyobad once again...
Really beautiful post. After a long time found my childhood. To know more this type of news please visit Keykhabor.
Post a Comment